বৃহস্পতিবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল। ইউরোর মতোই, বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বজায় ছিল। তবে, ইউরোর বিপরীতে, পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে দৃঢ়ভাবে স্থির হতে পারেনি। এই পরিস্থিতি পাউন্ড ক্রয় বা স্থানীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য দর বৃদ্ধির প্রত্যাশার কোনো ভিত্তি দেয় না।
আগেই আলোচনা করা হয়েছে, এই সপ্তাহে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দিকেই ইঙ্গিত দেয়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি কমেছে, যা নির্দেশ করে যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পরিকল্পনার চেয়ে আরও দ্রুত এবং বড় পরিসরে সুদের হার কমাতে পারে, সম্ভবত ০.২৫% করে চার ধাপে সুদের হার কমানো হতে পারে। এটি ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতির প্রত্যাশিত নমনীয়করণের চেয়ে দ্বিগুণ। এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বৈশ্বিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর ফলে, ফেডারেল রিজার্ভ পূর্বের প্রত্যাশার চেয়ে ধীর গতিতে আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করতে পারে। বর্তমানে, ২০২৫ সালের জন্য কেবল দুইবার ০.২৫% করে সুদের হার হ্রাসের পরিকল্পনা করা হয়েছে। অতএব, প্রকৃতপক্ষে একবার সুদের হার কমানো হতে পারে, আবার হয়তো একবারও কমানো নাও হতে পারে।
বর্তমানে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি? যেকোনো পরিস্থিতিতে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সম্ভবত ফেডের চেয়ে দ্রুত গতিতে নীতিমালা নমনীয় করবে। উপরন্তু, মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যে ফেডের নীতিমালার নমনীয়করণের পূর্বাভাস দিয়েছে। এটি কেবলমাত্র আগেই মূল্যায়ন হয়নি, বরং উল্লেখযোগ্য মাত্রায় মূল্যায়ন করা হয়েছে, যা বাস্তবায়ন না হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮০%। এই বিষয়গুলোই সমন্বয় পাউন্ডের দরপতন এবং ডলারের মূল্যের উত্থানের জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও, আমাদের যুক্তরাজ্যের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল, ১৬ বছরের নিম্নমুখী প্রবণতা এবং ৩ মাসের নিম্নমুখী প্রবণতাকে বিবেচনায় নিতে হবে। এর থেকে কী উপসংহারে আসা যায়? এটি স্পষ্ট যে পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে বলতে গেলে, গতকাল যুক্তরাজ্যে শিল্প উৎপাদন এবং জিডিপি সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা আমরা প্রাথমিকভাবে "বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়" বলে বিবেচনা করেছিলাম। তবে, এমনকি এই "কম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো" পাউন্ডকে কোনো সহায়তা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। নভেম্বর মাসে দেশটির জিডিপি মাসিক ভিত্তিতে মাত্র ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বার্ষিক ভিত্তিতে ১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে কম। অন্যদিকে, দেশটির শিল্প উৎপাদন ০.৪% হ্রাস পেয়েছে, যেখানে পূর্বাভাস ছিল ০.১% বৃদ্ধির। এই ফলাফলের আলোকে, সত্যিকার অর্থে কী ব্রিটিশ পাউন্ডের দর বৃদ্ধি সম্ভাবনা থাকতে পারে?
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্রিটিশ পাউন্ডের পরিস্থিতি বেশ নাজুক। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় সব প্রযুক্তিগত সূচক এবং চার্টে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করছে, এমনকি সবচেয়ে সাধারণ সূচকেও। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো CCI সূচক, যা প্রায়শই ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করছে এবং বুলিশ ডাইভারজেন্স প্রদর্শন করছে। তবে, এটি উল্লেখ করা জরুরি যে নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে—বিশেষত বর্তমানে যেমনটি রয়েছে—এই সিগন্যালগুলো শুধুমাত্র সম্ভাব্য কারেকশনের সম্ভাবনা নির্দেশ করে, প্রবণতার বিপরীতমুখীতা নয়। যদিও স্বল্পমেয়াদে পাউন্ডের মূল্যের কারেকশন হচ্ছে, তবে আমাদের পূর্বাভাসের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। আমরা এখনও আশা করছি যে পাউন্ডের মূল্য 1.1800 লেভেলের কাছাকাছি থাকবে।
গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে 116 পিপস, যা এই কারেন্সি পেয়ারের জন্য "উচ্চ" হিসাবে বিবেচিত হয়। শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি আমরা আশা করছি যে এই পেয়ারের মূল্য 1.2126 থেকে 1.2358 এর মধ্যে ওঠানামা করছে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল বর্তমানে নিম্নমুখী রয়েছে, যা স্থায়ী ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতার সম্ভাবনা নির্দেশ করে। CCI সূচকটি আবারও ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে; তবে, নিম্নমুখী প্রবণতায় যেকোনো ওভারসোল্ড স্ট্যাটাস সাধারণত একটি কারেকশনের সম্ভাবনা নির্দেশ করে। CCI সূচকে সম্প্রতি পরিলক্ষিত বুলিশ ডাইভারজেন্স একটি সম্ভাব্য কারেকশনের ইঙ্গিত দেয়।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
- S1: 1.2207
- S2: 1.2085
- S3: 1.1963
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
- R1: 1.2329
- R2: 1.2451
- R3: 1.2512
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। লং পজিশন ওপেন করা এই মুহূর্তে উপযুক্ত নয়, কারণ আমরা মনে করি যে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি ঘটাতে পারে এমন সম্ভাব্য সকল বিষয় ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং এখন নতুন কোনো প্রভাবক নেই। যদি কেবলমাত্র প্রযুক্তিগত সূচকের উপর ভিত্তি করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে মুভিং এভারেজের উপরে মূল্যের স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে 1.2329 এবং 1.2358 এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, শর্ট পজিশনগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের 1.2146 এবং 1.2126-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।