শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, তবে ইউরোর জন্য এখনও কিছুটা আশার আলো রয়েছে। শুক্রবারের মুভমেন্ট থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পেয়ারটির মূল্য তার পূর্ববর্তী স্থানীয় নিম্ন লেভেল ব্রেক করেনি। ইউরোজোনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলের পরেও, এই পেয়ারের মূল্য আগের নিম্ন লেভেলের নিচে নামতে ব্যর্থ হয়েছে, যা ইউরোর মূল্য বৃদ্ধির জন্য সামান্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
আমরা বারবার উল্লেখ করেছি যে, সর্বোচ্চ ইউরোর মূল্যের একটি কারেকশন হতে পারে। এই কারেকশন উল্লেখযোগ্য হতে পারে, তবে তা শুধুমাত্র একটি কারেকশনই থাকবে। ইউরোর মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা 16 বছর ধরে চলমান রয়েছে। শুক্রবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন—বেকারত্বের হার এবং নন-ফার্ম পেরোলস প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল, যা আরেকবার ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। বর্তমান মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে, আমরা প্রত্যাশা করছি যে ডলারের এই দর বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিট টাইমফ্রেমে, শুক্রবার কয়েকটি সিগন্যাল দেখা গিয়েছিল, তবে সেগুলো কাজে লাগানো কঠিন ছিল। মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট শুরু হয়। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলোর শক্তিশালী ফলাফলের কারণে, মাত্র 5 মিনিটে এই পেয়ারের 90 পিপস দরপতন ঘটে। যদিও এরপরে পুনরুদ্ধার হয়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের এমন ফলাফলের কারণে বাই ট্রেডে এন্ট্রি করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আমাদের মতে, ট্রেডাররা 1.0269–1.0277 লেভেল থেকে বাউন্সের সুবিধা নিতে পারতেন, যার ফলে কয়েক ডজন পিপস মুনাফা করা যেতে পারত।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। আমরা মনে করি, মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতন আবারও শুরু হয়েছে এবং এখন ইউরোর মূল্য ডলারের সাথে প্যারিটি লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে আমরা প্রত্যাশা করছি ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকবে, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো এখনও মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে।
সোমবার এই পেয়ারের মূল্যের কিছুটা শান্ত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে; তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সামগ্রিক নিম্নমুখী প্রবণতা ও সেইসাথে স্থানীয় পর্যায়ে তিন-মাসের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও চলমান রয়েছে। মার্কেটের ট্রেডাররা শুধুমাত্র মার্কিন শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় এই পেয়ার বিক্রি করছে না।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করুন: 1.0156, 1.0221, 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, এবং 1.0845–1.0851। সোমবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, ফলে এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি দেখা যেতে পারে এবং সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।